December 22, 2024, 10:36 pm
কনকনে ঠাণ্ডায় কাঁপছে পুরো দেশ। ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত জনজীবন। এর ফলে খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছে বেশি বিপাকে। এক সপ্তাহ যাবত উত্তরাঞ্চল হয়ে মধ্যাঞ্চল, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত তীব্র শীতের দাপট চলছে। বহু জেলায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। কাজে বের হয়ে বিপাকে পড়ছে দিনমজুররা। উষ্ণতা পেতে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই। এবার মাঘের হাড় কাঁপানো শীতে যোগ হতে যাচ্ছে বৃষ্টি। আজ বুধবার দক্ষিণাঞ্চল এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার দেশের ছয় বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এই বৃষ্টি গুঁড়িগুঁড়ি থেকে মাঝারি মাত্রার হতে পারে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গতকাল মঙ্গলবার সকালে সারা দেশেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির মধ্যে থাকলেও কুয়াশার দাপটের কারণে ঠাণ্ডা জেঁকে বসেছে। ভোর, সকাল কিংবা দুপুর গড়িয়ে বিকাল, কুয়াশার ভারি স্তর ভেদ করে সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। রোদের স্বল্পতার কারণে দিনের বেলাতেও শীতের অনুভূতির তীব্রতায় কষ্ট বাড়ছে। অন্যদিকে আকাশে নিচুস্তরে মেঘের কারণে আটকে যাচ্ছে দৃষ্টিসীমা। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ায় দেশ জুড়ে শীতের তীব্রতার বিস্তার বাড়ছে। উড়োজাহাজ থেকে শুরু করে নৌযান ও সড়কের যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। দেশের হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গতকাল সূর্য তাপের অভাবে রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা সোমবারের চেয়ে হ্রাস পায়। রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে ৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, আজ বুধবার ভোর ৪টার পর থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যে পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে তা অনেক বেশি দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের ওপরে সরে গেছে। আগামী দুই দিনে আরও বেশি দক্ষিণে সরে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো। ফলে পূর্বে ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের ওপরে বৃষ্টি শুরু হয়ে পশ্চিমবঙ্গের ওপরে দিয়ে বাংলাদেশের রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের জেলেগুলোর ওপর দিয়ে বাংলাদেশের প্রবেশের সম্ভাবনা নির্দেশ করলেও গতকাল ১৬ জানুয়ারি সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে বৃষ্টি শুরু হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দক্ষিণ ও ওড়িশা রাজ্যের ওপরে। সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ওপরে সামান্য পরিমাণ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টিপাত মূলত পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে খুলনা বিভাগ ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ওপরে স্থানভেদে সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১০ থেকে ৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত। এই বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আজ থেকে ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যার ৬টার মধ্যে।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, আজ বুধবার গভীর বা ভোররাত থেকে খুলনা বিভাগে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কয়েক দিন আকাশ মেঘলা থাকবে। জানুয়ারি মাস জুড়ে কুয়াশা থাকবে। তবে ১৯ ও ২০ জানুয়ারির দিকে কুয়াশা কম থাকবে। এর মধ্যে আবার আজ, আগামীকাল ও ১৯ জানুয়ারি মেঘলা আকাশ থাকবে। কুয়াশা কেটে গেলে রাতের তাপমাত্রা কমবে।
সুত্রঃইত্তেফাক